সাইফুল্যাহ মোঃ খালিদ রাসেল : নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন আলোচিত ঘটনায় সারা বিশ্ববাসী সমালোচনায় মূখর। গত কয়েক যুগ ধরে নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, সারা দেশে যতগুলো অপরাধ মূলক ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তার মধ্যে বেশির ভাগই সংগঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। প্রাচ্যের ড্যান্ডি নামে খ্যাত নারায়ণগঞ্জকে এখন মানুষ গুম-খুনের শহর হিসেবেই চেনে। আইন শৃঙ্খলার অবনতির কারনে নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে সর্বদা আতংক বিরাজ করতো। সবাই তাদের জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলো। শুধু তাই নয় আইনের প্রতি তাদের আস্থা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিলো। পুরো নারায়ণগঞ্জ যেন অপরাধের কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছিলো। তেমনি এক সংকটময় মূহুর্তে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন মোঃ হারুন-অর রশিদ। অপরাধ নির্মূলে কঠোর অবস্থানে থাকা হারুন-অর রশিদ কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসেনপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা আব্দুল হাসেম এবং মাতা জহুরা খাতুনের কৃতি সন্তান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ-বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএসসি (অনার্স), এমএসএস এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি করেন। সফল শিক্ষা জীবন শেষ করার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে যোগদান করে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন। শুরু হয় অপরাধের বিরুদ্ধে তাঁর অবিরাম সংগ্রাম। কর্মসূত্রে যে সকল জেলাতে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন সেখানে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তিনি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তার সাহসী ভূমিকার কারনে খুব সহজেই তিনি জনমনে ঠাঁই করে নিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে এসেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের কারনে অনেকটাই কমে এসেছে অপরাধীদের দৌরাত্ব। নারায়ণগঞ্জে চিহ্নিত চোরাই জ্বালানী তৈল ব্যবসায়ীদের কঠোর ভাবে দমন করে তাদের আইনের আওতায় এনে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন আইনের উর্দ্ধে কেউ নয়। এসপি হারুন-অর রশিদ নারায়ণগঞ্জে যোগদানের পর নারায়ণগঞ্জবাসীর দূর্ভোগ লাঘবের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলাকে হকার মুক্ত ফুটপাত ও যানজট মুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তিনি অপরাধীদের জন্য যেমন পর্বতের ন্যায় কঠিন তেমনি সাধারনের জন্য কুসুমের মত কোমল। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রতিটি পুলিশ সদস্যদের সাথে প্রতিনিয়ত কল্যান সভা করে সবার খোজ-খবর নিয়ে থাকেন। কাজের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য পুলিশ সুপার কাপ ফুটবল টুনামেন্ট ২০১৯ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। সন্ত্রাস দমনে তিনি বরাবরই ব্যাক্তি স্বার্থের উর্দ্ধে। অপরাধী যে দলের হোক না কেন তিনি তৎক্ষনাত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কখনোই কুন্ঠাবোধ করেন না। আইনের প্রতি অটল অবস্থানে থেকে তিনি সকল বাধাঁ বিপত্তিকে পেছনে ফেলে ন্যায়ের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। এসপি হারুন-অর রশিদ ২০১৮ সালে অসীম সাহসিকায় ও বীরত্বপূর্ন কাজের স্বীকৃত্বি স্বরুপ এবং গুরুত্বপূর্ন মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রন, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা,সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরনের জন্য বহু প্রশংসিত হয়েছেন। ফলশ্রুতিতে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৯ উপলক্ষে রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন-অর রশিদকে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম ব্যাচ পড়িয়ে দেন। এনিয়ে তিনি তিনবার বিপিএম এবং দুইবার পিপিএম পদকে ভূষিত হন। আরও উল্লেখ্য যে ২৬/০২/২০১৯ তারিখে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ঢাকা রেঞ্জের ক্রাইম কনফারেন্স মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে মাদক উদ্ধার, ওয়ারেন্ট তামিল, শিল্প এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি সন্তোষজনক হওয়ায় সর্বসম্মতি ক্রমে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার হারুন-অর রশিদকে ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত করেন। নারায়ণগঞ্জবাসীর মতে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি পুলিশ সদস্য যদি এসপি হারুন-অর রশিদের মত কর্তব্যনিষ্ঠ এবং ন্যায়পরায়ন হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জ একটি অপরাধ মুক্ত নগরীতে পরিনত হবে। নারায়ণগঞ্জবাসী এসপি হারুন-অর রশিদের সফল কর্মজীবন এবং দীঘায়ু কামনা করেন।