সাইফুল্যাহ মোঃ খালিদ রাসেল : পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্যের পথচলা শুরু। মানবসেবার ব্রত নিয়ে পথ চলতে গিয়ে নিজের ইচ্ছা, আকাংখা, সখ-আনন্দকে নীরবে বিসর্জন দিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। তবুও দায়িত্ব পালনে পিছপা হয়ে যায়নি । যে কোন প্রকার ধর্মীয় কিংবা সামাজিক উৎসবে যখন সারাদেশ পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যস্ত তখনো তাঁরা কর্মসূত্রে পারিবারিক আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। সাধারন মানুষের আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে তারা ছুটিহীন সময় পাড় করে। পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ করার বিষয়টি মুঠোফোনেই সীমাবদ্ধ রাখতে হয় বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের। শুধুমাত্র তাই নয় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য জীবনের মায়া তুচ্ছ করে সর্বদা সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক এবং সকল অপরাধ নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের জন্য করা সকল ত্যাগ আড়ালে রেখেই কর্মব্যস্ত থাকে বাংলাদেশ পুলিশ। বাংলাদেশের যে কোন দূূর্যোগময় পরিস্থিতিতেও সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ পুলিশ। করোনা মহামারির সময়ও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। মাহামারির প্রকোপ ঠেকাতে সারাদেশে যখন সাধারন ছুটি এবং লকডাউন চলছিলো তখনও প্রতিটি পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে দায়িত্বরত ছিলেন। পারিবারিক সুরক্ষার চাইতেও দেশমাতৃকার সেবাই তাদের কাছে বেশী প্রাধান্যদায়ক ছিলো। কর্মরত থাকাকালীন কোনভাবেই সামাজিক দূরুত্ব মেনে চলা সম্ভব হয়না। তাই মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে তারাই প্রথম সারিতে অবস্থান করে। তবুও ভয়কে জয় করে দেশসেবায় অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য। সর্বোপরি আনন্দ উৎসব থেকে শুরু করে দেশের যে কোন ক্রান্তিলগ্নে দেশরক্ষার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশের কয়েকজন সদস্যের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেদের পরিবার পরিজন থেকে বহুদূরে অবস্থান করতে হয়। সকল প্রকার রঙীন উৎসবে রঙহীন দিন কাটাতে হয় আমাদের। এমনকি ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতেও আক্রান্ত কিংবা মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকিকে পেছনে ফেলেই কর্মব্যস্ত থাকতে হয় বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের। উৎসব আনন্দ হউক কিংবা পারিবারিক কোন বিপদ-আপদ কোন কিছুতেই সময়মত নিজেদের সামিল করা সম্ভব হয়না। তারা আরও বলেন, ভয়াবহ করোনায় বাংলাদেশ পুলিশের অনেক সদস্য আক্রান্ত এবং মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছেন। তবুও চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি আমরা। বিভিন্ন প্রয়োজনে করা ছুটির আবেদনগুলো বার বার না মঞ্জুর করা হয়। এভাবেই প্রতিটি দিন শেষ হয় আমাদের। পরের দিন আবার নতুন উদ্যমে পথচলা শুরু হয়। এতকিছুর পরও নিজেদের গর্বিত এবং সৌভাগ্যবান মনে করি দেশের জন্য কাজ করতে পেরে। এককথায় বাংলাদেশ পুলিশ শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দেশ এবং সাধারন মানুষের নিরাপত্তা রক্ষায় কান্ডারী হিসেবে কাজ করে যাবে।