করোনাভাইরাস বা যেকোনো ভাইরাস মূলত আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতার পরীক্ষা নেয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হলে সহজে দুর্বল হয়ে পড়ার সুযোগ খুব কম থাকবে।
আমরা জানি যে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ আমাদের দেহের ভাইটাল ফোর্স বা জীবনীশক্তিকে উজ্জীবিত করে জীবনীশক্তিকে শক্তিশালী করার মধ্য দিয়ে রোগজ শক্তিকে পরাভূত করে একজন রোগীকে রোগমুক্ত করে।
আমাদের দেহাভ্যন্তরীণ কোনও রোগজ শক্তির উৎপাদিত সর্বোচ্চ সাদৃশ্য (মাক্সিমাম সিমিলিমাম) বা সার্বদৈহিক লক্ষণসমষ্টির (টোটালী অফ সিমটম্পস) বিরুদ্ধে সুনির্বাচিত সমলক্ষণ উৎপাদনকারী ল অব সিমিলিয়া বা সিমটোমেটোলজি অনুসারে কোনও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে দেহাভ্যন্তরীণ উৎপাদিত যেকোনো চাহিদা বা ঘাটতি বা অসংগতি পূরণের মাধ্যমে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। এটি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে বৃদ্ধি করে আমাদের রোগমুক্ত হতে সাহায্য করে।
কিন্তু কী ভাবে?
অনেকে বলেন খাবারের মাধ্যমে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার জন্য। হ্যাঁ, খাবারের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। তবে তা সবক্ষেত্রে নয়। রোগমুক্ত দেহ ওষুধ ব্যতীত খাবারের মাধ্যমে ইমিউন সিস্টেমকে বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু রোগাক্রান্ত দেহ খাবারের পাশাপাশি ওষুধের সাহায্য ছাড়া পরিপূর্ণ ভাবে তা পারে না।
কারণ আমরা জানি যে, আমাদের এই মানব দেহ অসংখ্য মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। সে সকল মৌলিক ও যৌগিক পদার্থগুলো আমাদের দেহে সুবিন্যস্ত ও পরিমিত মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত থাকে। যখন আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ কোনো পদার্থের ঘাটতি বা মাত্রাধিক্যের কারণে, আমাদের অনিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খল জীবন যাপনের কারণে অথবা দেহের ভেতরে কোনো অপ্রয়োজনীয় বহিরাগত পদার্থের বা বস্তুর উপস্থিতির কারণে দেহ ও মন অনেক সময়ই ইমব্যালান্স কন্ডিশনের মুখোমুখি হয়।
এই অসামঞ্জস্যতার কারণে দেহের ও মনের বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ কোনো বস্তগত বা অবস্তুগত স্নায়ুর পরিবর্তন হলে তখন তাকে আমরা রোগ বলি।
আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ কোনো পদার্থের মাত্রাধিক উপস্থিতির কারণে, ঘাটতিজনিত কারণে, আমাদের অনিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণে আমাদের জীবনীশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। আবার সেই জীবনীশক্তি দুর্বল হবার কারণে দেহে বিভিন্ন বহিরাগত শত্রু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের শিকার হয়ে মানুষের দেহমন রোগে ভোগে। অর্থাৎ আমাদের রোগের মূল কারণ হিসেবে আমাদের বিশৃঙ্খল জীবনযাপন ও জীবনীশক্তির দুর্বলতাই প্রধানত দায়ী।
এমতাবস্থায় আমাদের শারীরিক বা মানসিকভাবে ফুটে ওঠা সাদৃশ্য ও লক্ষণ বিবেচনা করে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সুক্ষ মাত্রায় প্রয়োগের মাধ্যমে দেহাভ্যন্তরীণ অনিয়ন্ত্রিত অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। তখন আমাদের দেহ পুনরায় তার আপন গতি ফিরে পাওয়ার মাধ্যমে ইমিউন সিস্টেমকে বৃদ্ধি করে।
এভাবে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হবার ফলে আমাদের দেহমন আবার পূর্বের মত স্বাভাবিক ও সুস্থ অবস্থায় ফিরে যায়। এই অবস্থায় প্রয়োজনীয় খাবারের মাধ্যমে ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের মাধ্যমে দেহের ইমিউন সিস্টেম স্বাভাবিক থাকার ফলে আমরা প্রতিনিয়ত সুস্থ থাকি।
এক্ষেত্রে উদাহরণ দিয়ে বলি, অনেক সময় আমাদের অনেক রোগী এসে বলে ডাক্তারবাবু প্রতিদিন এত এত ফলমূল, শাকসবজি, মাছমাংস, দুধ ডিম, ভাল ভাল খাবার পরিমিত ভাবে খাই, তারপরও আমার স্বাস্থ্যের অবস্থা এই রকম কেন?
আমি কেন সবসময় রোগে ভুগি?
সত্যিই তো, রোগী সব খাবার-দাবার স্বাভাবিকভাবে খাবার পরেও তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে না বা জীবনশক্তি উন্নত হচ্ছে না বা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হচ্ছে না! কিন্তু কেন? কী কারণে? কারণ তার দেহাভ্যন্তরে কোনো রোগজশক্তি জীবনীশক্তিকে বাধা দিচ্ছে বা তার ইমিউন সিস্টেমকে বাধা দিচ্ছে তার স্বাভাবিক ক্রিয়াকে ব্যাহত করছে তাই।
এখানে রোগীকে তার দেহ মনের সর্বোচ্চ সাদৃশ্য (মাক্সিমাম সিমিলিমাম) সার্বদৈহিক ও মানসিক লক্ষণযুক্ত ল অব সিমিলিয়া অনুসারে সাদৃশ্য হোমিওপ্যাথিক ওষুধ পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগের মাধ্যমে দেহাভ্যন্তরীণ সকল বাধা দূর করা সম্ভব। এতে রোগীর সুস্থ ও স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার ফলে রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন করে ও স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিনিয়ত সুস্থ থাকে।
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সহজ উপায়
একজন অভিজ্ঞ রেজির্ষ্টাড হোমিওপ্যাথের মাধ্যমে আপনার সার্বদৈহিক ও মানসিক লক্ষণসমষ্টি বিবেচনায় সাদৃশ্য হোমিওপ্যাথিক ওষুধ পরিমিত ও নিদের্শিত মাত্রায় প্রয়োগের মাধ্যমে আপনার স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন।
মনে করুন, একজন পুরাতন শ্বাসকষ্টের রোগী যদি একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে আগে থেকেই তার সার্বদৈহিক লক্ষণভিত্তিক সাদৃশ্য হোমিও ওষুধ সেবন করে, তবে সেই রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক অনেক কমে যাবে বা আক্রান্ত হলেও তার মৃত্যু ঝুঁকি আগের চেয়ে অনেক অনেক গুণ কমে যাবে।
এখানে স্পষ্টত ওষুধ খাওয়া কারণে রোগীর জীবনীশক্তি আগের চেয়ে অনেক উজ্জীবিত হবে এবং ইমিউন সিস্টেম আগের চেয়ে অনেক উন্নত হবে তাই।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আর্সেনিক এ্যালবাম ৩০
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার পূর্বেই যদি কোন সুস্থ্য ব্যাক্তি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আর্সেনিক এ্যালবাম নির্দেশিত মাত্রায় সেবন করে তবে তাহা উক্ত ব্যাক্তির শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক ( প্রিভেনটাইভ) ও প্রতিষেধক (প্রোপাইলেটিক) হিসেবে কাজ করবে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে এই ঔষধটি আপনি গ্রহণ করে আপনার শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করুন।
ঔষধ আর্সেনিক এ্যালবাম ৩০
ডোজেজ ফরম বা সেবন বিধি :
পিলে : ৫টি দানা এককাপ জলে দিয়ে চামুচ দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে মিশিয়ে নিন।
তারপর ওখান থেকে…(অথবা)
লিকুইডে : ১ ফোটা ঔষধ ১ কাপ জলে দিয়ে ভালো ভাবে চামুচ দিয়ে নেড়ে তারপর ওখান থেকে….
(১) ১২ বছর বা তার উর্দ্ধে প্রাপ্তবয়স্করা দুই চামুচ করে
(২) ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের ১ চামুচ করে
(৩) দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের হাফ চামুচ করে
(৪) এক থেকে দুই বছরের শিশুদের ১০-২০ ফোঁটা করে
(৫) নবজাতক শিশুদের ২-৫ ফোঁটা
সকালে খালিপেটে পরপর তিনদিন সেব্য
এটি প্রতিমাসে একবার করে উক্ত নিয়মে খাবেন।
যতদিন পর্যন্ত এই ভাইরাসটি ঐ অঞ্চল বা ঐ দেশে থাকবে ততদিন পর্যন্ত নিয়মিত ঔষধটি নিবেন। বিঃদ্রঃ
পরপর দুইমাস ৩০ শক্তি খাবার পরে তৃতীয় মাস থেকে ২০০ শক্তি খাবেন।
আক্রান্ত রোগীদেও ক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসা
করোনায় আক্রান্ত রোগীরা একজন অভিজ্ঞ রেজির্ষ্টাড হোমিওপ্যাথের পরামর্শ লক্ষণ সমষ্টি অনুসারে হোমিও ঔষধ সেবন করলে ৪ থেকে ৭ দিনের করোনা মুক্ত হবেন।
শুধুমাত্র করোনা নয়, সার্বদৈহিক ও মানসিক লক্ষণসমষ্টি অনুসারে হোমিওপ্যাথিতে যেকোন রোগেরই চিকিৎসা করা সম্ভব।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
সকল গর্ভবতী মা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের রোগীরাও নির্দেশিত মাত্রায় সেবন করতে পারবে কোন সমস্যা নেই।
খাবারের মাধ্যমে ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধিও উপায়
ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিংক সমৃদ্ধ খাবার শরীরে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়।
নিচে উল্লেখিত তালিকায় নজর রাখুন
১। ভিটামিন ডি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনন্য ভূমিকা পালন করে। যাদের শরীরে ভিটামিন-ডি বেশি বা নরমাল, তাদের রেসপাইরেটরি ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কম।
ভিটামিন ডি সহজে পেতে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সূর্যালোকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার থাকলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ হবে। এছাড়া তৈলাক্ত মাছ বা সামুদ্রিক মাছে, দুধ, দই, ডিমের কুসুম, মাশরুম ইত্যাদিতে ভিটামিন ডি পাবেন।
২। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি দারুণ কার্যকর। ভিটামিন সি মানবদেহের কোষের পাওয়ার হাউস নামে খ্যাত মাইটোকন্ড্রিয়াকে রক্ষা করতে পারে। করোনাভাইরাসের টার্গেট হচ্ছে মাইটোকন্ড্রিয়া, যার মাধ্যমে ভাইরালেন্স
এর বৃদ্ধি ঘটায়।
শরীরের ভেতরে বিক্রিয়ার কারণে যেসব কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেগুলো সারিয়ে তুলতে কাজ করে ভিটামিন সি।
ভিটামিন সি আমলকি, লেবু, কমলা, পেয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, পেয়ারা, পেঁপে, কাঁচা মরিচ, সরিষা শাক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে থাকে। যেহেতু মানব দেহ ভিটামিন সি জমা করে রাখতে পারে না, তাই প্রতিদিন গ্রহণ করা প্রয়োজন। পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষের দৈনিক ৯০ মিলিগ্রাম এবং একজন নারীর ৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি দরকার।
৩। মৌসুমি যেকোনো দেশিফল, মধু, রসুন, কাঁচা হলুদ, আদা, কালিজিরা, তিশী, মেথি, অশ্বগন্ধা, পিপুল, তুলসি, ত্রিফলা, সজনে বা সাজনা, লেবু, পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ঝাল তরকারি মানবদেহের উত্তাপ বাড়িয়ে রক্ত সঞ্চালন করে তাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৪। অটোফেজি বা উপোসে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। উপবাস বা কিছু না খেয়ে ১৬ ঘণ্টা থাকলে অটোফেজি অ্যাক্টিভেট হয় শরীরে। প্যাথোজেন, ব্যাকটেরিয়া, ইত্যাদি জীবাণুকে ধ্বংস করে দিয়ে দেহকে সুস্থ রাখে অটোফেজি।
ধর্মীয় ভাবেও অটোফেজি করা হয়। মুসলিমদের আটোফেজির নাম রোজা বা সিয়াম বলে। সনাতনধর্মের ও বৌদ্ধধর্মের আটোফেজির নাম উপবাস, খ্রিস্টানরা ফাস্টিং বলে।
মেডিকেল সায়েন্স একে অটোফেজি বলে। ধর্মীয়ভাবে এটি যার যার ধর্মীয় বিধিনিষেধ অনুসারে সুনির্দিষ্ট নিয়মে পালিত হয়।
কিন্তু মেডিকেল সায়েন্সে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যে সারাবছর জুড়ে নানা রকমের উপোসের অস্তিত্ব আছে। শুধু পানি লবণ খেয়ে, শুধু ফল খেয়ে, ১৬ ঘণ্টা, ৩৬ ঘণ্টা, ৭২ ঘণ্টার নানান প্যাকেজ আছে। মূল বিষয় অটোফেজি অ্যাক্টিভ করা।
ফাস্টিং বা উপবাস করাকালীন বিট লবন খাবেন, যেন খনিজ ঘাটতি না হয় (রমজান মাস ব্যতীত)।
৫। অঙ্কুরিত বীজ রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়। অঙ্কুরিত বীজ বা স্প্রাউতস এ প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, মাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফলেট (ভিটামিন-বি) উচ্চমাত্রায় থাকে।
মানুষ নিজ দেহে তৈরি করতে পারে মাত্র ১১টি অ্যামাইনো এসিড। মানুষকে খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয় ৯টি অ্যামাইনো এসিড, যার সবগুলিই অঙ্কুরিত বীজে থাকে।
৬। লাল চালে বিদ্যমান সেলেনিয়াম শরীরে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়। চালের সবচেয়ে পুষ্টিকর অংশ বাহিরের লালচে বা বাদামী আবরণ পালিশ করে তুলে ফেলে ভেতরের শুধু শর্করা অংশ খাওয়ার ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে।
সেলেনিয়ামের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে ব্রাজিলিয়ান নাটস বা বাদাম। প্রতিদিন মাত্র ২টি নাটস বা বাদাম খেলে পূরণ হবে দৈনিক সেলেনিয়ামের চাহিদা। এছাড়া, টুনা ফিশ, টার্কি মুরগি, চিংড়ি, ডিম প্রভৃতিতে সেলেনিয়াম রয়েছে।
৭। সকল প্রকার শাক শরীরে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়। সব ধরনের শাক ও সবজি একত্রে মিশিয়ে রান্না করে খেলে শরীরে রোগব্যাধি হয় না বলে গ্রাম বাংলার মানুষ বিশ্বাস করে। সকল প্রকার শাক সবজি দিয়ে রান্নাকরা পাঁচনও খুব উপকারী ও রোগ প্রতিরোধী। ঋতু পরিবর্তনজনিত রোগব্যাধির হাত থেকে বাঁচার জন্য পাঁচন ও শাকসবজি, ফলমূল খাওয়া খুবই প্রয়োজন।
৮। গুলঞ্চ শাক মানবদেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়াতে অতুলনীয়। জ্বর-সর্দি-কাশিতে গুলঞ্চ পাতা ভাজি ভীষণভাবে উপকারী।
৯। গাঢ় সবুজ রঙের শাক, কলা, মাছ, ডার্ক চকলেট, কাজুবাদাম, ব্রাজিলিয়ান নাটস, পেস্তা বাদাম, কাঠ বাদাম, সূর্যমূখীর বীজ ইত্যাদিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়।
১০। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও রোগ থেকে দ্রুত সেরে উঠতে ভিটামিন বি১২ দারুণ কার্যকর। বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবার ও ডিমে ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়। দুধ এবং কলিজার মধ্যে ভিটামিন বি আছে।
১১। শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি হলে রক্তে শ্বেতকণিকার ক্ষমতা কমে যেতে শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি হলে রক্তে শ্বেতকণিকার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। ফলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বাদাম, শিম, দুগ্ধজাত পণ্যে জিঙ্কের পরিমাণ বেশি থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে জিঙ্কের পরিমাণ কমে গেলে তারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়।
১২। উচ্চ আঁশ বা ফাইবার যুক্ত খাদ্য ডেটক্স প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে কিডনি লিভার পরিষ্কার করে। ভাইরাস যে টক্সিন উৎপাদন করে তা বিভিন্ন অঙ্গ আক্রমণ করে। অঙ্গ ভাল রাখতে আঁশ বা ফাইবার যুক্ত খাবার সাহায্য করে ও বন্ধু অণুজীবের খাদ্য বাড়িয়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্ষম রাখে।
দ্রবণীয় আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে আছে ওটমিল, শিমজাতীয় খাবার (মটর, শিম, ডাল), বার্লি, ফল ও সবজি (কমলা, আপেল ও গাজর)। বিভিন্ন বীজ, ফলের খোসা, গমের রুটি, লাল ও বাদামি চালের ভাতে অদ্রবণীয় আঁশ থাকে।
১৩। ভিটামিন ‘বি’ এবং ‘সি’ পানিতে মিশে যাওয়ার কারণে প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যায়। ফলে এগুলো শরীরে জমা হয় না। প্রতিদিনই কিছু পরিমাণে ভিটামিন বি এবং সি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
ডা. বিপুল চৌধুরী
প্রভাষক, চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকলেজ ও হাসপাতাল এবং গাইড, হ্যানেম্যান কলেজ অব হোমিওপ্যাথি, লন্ডন, ইউকে (বাংলাদেশ শাখা)
চেম্বারঃ
চৌধুরী হোমিও মেডিকেল সেন্টার
শাপলা হাসপাতাল হতে ১৫০ গজ দক্ষিণে, বীরমুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান সড়ক (বারতোপা রোড়), স্বদেশ হাসপাতালের সামনে, মাওনা চৌরাস্তা, শ্রীপুর, গাজীপুর।
ফোনঃ ০১৭৩৫-২০৪৪৯১, ০১৯৮১-৬৪৪০০১, ০১৮২০-৫৭৪৪৬৫