নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লা, সিরাজগঞ্জ ও রাজবাড়ীতে পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন ডাকাত ছিলেন। অপরজন ছিলেন চরমপন্থার সঙ্গে যুক্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ও আজ শুক্রবার ভোরের দিকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাগুলো ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার তিতাস উপজেলার নারায়ণপুর কবরস্থানের কাছে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের সঙ্গে ডাকাতদের গোলাগুলিতে দুই ডাকাত নিহত হন। এ ঘটনায় পাঁচ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন তিতাস উপজেলার মানিকনগর গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে আলামিন (৩৫) ও বুড়িচং উপজেলার কংস গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে এরশাদ মিয়া (৩২)।
কুমিল্লা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ কামলার আখন্দ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে একদল ডাকাত নারায়ণপুর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ডাকাতেরা। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। একপর্যায়ে দুজন মারা যান। ঘটনাস্থল থেকে দুটি দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় আজ শুক্রবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ লালন হালদার (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি চরমপন্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পুলিশের ভাষ্য, লালন নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) জুলহাস বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড। ঘটনাস্থল থেকে একটি একনলা বন্দুক, একটি ওয়ান শুটার গান ও ছয়টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। লালনের বাড়ি পাবনা জেলার সুজানগর থানার গোবিন্দপুর গ্রামে।
পাংশা সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফজলুল করিমের তথ্য হচ্ছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পাংশা থানার হাবাসপুর ইউনিয়নের স্লুইসগেট এলাকায় আজ ভোর রাতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় চরমপন্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে লালন গুরুতর আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এএসপি বলেন, লালনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪টি মামলা রয়েছে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় র্যাব-১২ এর সঙ্গে বন্ধুক যুদ্ধে হযরত আলী নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। র্যাবের ভাষ্য, নিহত ব্যক্তি ডাকাত ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার পাইকপাড়ার শ্মশানঘাট এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। র্যাব ঘটনাস্থল থেকে ২টি শুটার গান, ১৪টি কার্তুজ, ১টি কুড়াল, ১টি হাঁসুয়া ও ৩টি পিস্তলের গুলি উদ্ধার করেছে।
নিহত ব্যক্তির বাড়ি উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের পোংখারুয়া গ্রামে।
র্যাব-১২-এর স্পেশাল কোম্পানি সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাকিবুল ইসলাম খান জানান, উল্লাপাড়ার পাইকপাড়া গ্রাম এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে—এমন সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের সদস্যরা সেখানে অভিযান চালান। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা র্যাবের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে একজনকে শ্মশানঘাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ডাকাতের বাকি সদস্যরা পালিয়ে যায়। আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরে নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন তাঁকে হযরত আলী বলে শনাক্ত করেন।
উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান কউশিক আহমেদ জানান, র্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে হযরত আলী নিহত হয়েছেন। তিনি এলাকায় শীর্ষ ডাকাত হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে উল্লাপাড়া থানাসহ জেলার বিভিন্ন থানায় ডাকাতির ১০টি মামলা রয়েছে।