তীব্র গরম যে কারো জন্যই অস্বস্তিকর। গর্ভবতী নারীর জন্য এই আবহাওয়া শুধু অস্বস্তিকরই নয়, তা বিপজ্জনকও বটে। কারণ শরীর বেশি গরম হয়ে গেলে বা পানির অভাব হলে তা গর্ভাবস্থায় বিপদ ডেকে আনতে পারে। গর্ভবতী নারী ও তার ঘনিষ্ঠদের জন্য এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে অবস্থিত ফিটাল কেয়ার সেন্টার ফর নিক্লাউস চিল্ড্রেন’স হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. সায়মা আফতাব।ওই চিকিৎসকের মতে, তীব্র গরমে একজন গর্ভবতী নারীর শরীরে দুই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
হাইপারথার্মিয়া
গর্ভাবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়াকে হাইপারথার্মিয়া বলে। এটি শিশুর জন্মগত স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে, গর্ভাবস্থার প্রথম ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে অতিরিক্ত উত্তাপ শিশুর মস্তিষ্ক বা মেরুদণ্ডের ত্রুটি তৈরি করতে পারে।
জ্বর, অতিরিক্ত উত্তাপে বাইরে যাওয়া, এমনকি বেশি গরম পানিতে গোসল করলেও হাইপারথার্মিয়া হতে পারে। কিন্তু গর্ভাবস্থার প্রথম আট সপ্তাহের পর হাইপারথার্মিয়া থেকে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না। এমনকি আট সপ্তাহের মাঝেও হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদের মেরুদণ্ডে ত্রুটি নিয়ে জন্মানো সন্তান খুব একটা বেশি নয়। প্রতি ১০ হাজারে তিনজন হতে পারে এমন।
পানিশূন্যতা
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে অনেক পরিবর্তন আসে। বিশেষ করে তরল ব্যবহার করে আমাদের শরীর যেভাবে তাপমাত্রা কমায়, এ প্রক্রিয়াটিতেও আসে পরিবর্তন। গর্ভাবস্থায় খুব সহজেই পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন একজন নারী। পানিশূন্যতার একটি লক্ষণ হলো মাথা ঘোরা। গর্ভবতী নারীর জন্য তা বিপজ্জনক। কারণ মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়াটা মা ও শিশু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ ছাড়া পানিশূন্যতার কারণে জরায়ুর পেশিতে টান পড়তে পারে। পানিশূন্যতার কারণে সময়ের আগেই প্রসব বেদনা উঠতে পারে এবং এ প্রসব হতে পারে ঝুঁকিপূর্ণ। যে এলাকায় বেশি গরম পড়ে, সেখানে সময়ের আগে প্রসবের প্রবণতা বেশি থাকে।
এ বিষয়ে সায়মা আফতাবের পরামর্শ, গর্ভাবস্থায় নারীদের বেশি সময় বাইরে থাকা যাবে না। অবশ্যই সরাসরি রোদে যাওয়া যাবে না, ছায়ায় থাকতে হবে। এর পাশাপাশি দিনে ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।