বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই অঞ্চলে বিভিন্ন শ্রেণিতে এক হাজার ৬৮৫টি পদের বিপরীতে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয় দুই বছরের বেশি আগে। এরপর রেলওয়ের ১৯৮৫ নিয়োগবিধি অবৈধ ঘোষণা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ওই পদগুলোয় নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি অন্য পদগুলোয়ও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে জটিলতার মুখে পড়েছে রেলওয়ে।
এ অবস্থায় রেলওয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও বিধিমালা পর্যালোচনায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে জানানো হয়, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ১৩টি ক্যাটেগরিতে এক হাজার ৩২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। ১৯৮৫ সালের রেল নিয়োগবিধির অধীনে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান ছিল। তবে ২০১৯ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই নিয়োগবিধি অবৈধ ঘোষণা করে। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে পশ্চিমাঞ্চলে ১২টি ক্যাটেগরিতে ৬৫২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়াও আটকে যায়।
আর পশ্চিমাঞ্চলের পদগুলো হলো গেট কিপার ১৬৯টি, পোর্টার ৯১টি, সাব-ইন্সপেক্টর চারটি, টিকেট কালেক্টর (গ্রেড-২) দুটি, পার্শ্বেল সহকারী (গ্রেড-২) আটটি, টিএক্সআর সাতটি, স্টোর মুন্সী ছয়টি, ট্রেসার ১৪টি, টাইম কিপার পাঁচটি, আমিন ছয়টি ও মাতৃভাষা শিক্ষক ৯টি।
এদিকে ২০২০ সালের নভেম্বরে রেলের নতুন নিয়োগবিধি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়। তবে নতুন নিয়োগবিধিতে বিভিন্ন পদের বিপরীতে আবেদনের যোগ্যতা তথা শর্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণি পাসের পরিবর্তে ন্যূনতম যোগ্যতা এসএসসি রাখা হয়েছে। এছাড়া কোটার হারও পরিবর্তন করা হয়েছে।
এতে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় করণীয় নির্ধারণে রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের মতামত জানতে চাওয়া হয়। বৈঠকে এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী যেসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন বিধির শর্ত পুরনোটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন।
তবে যেসব পদের বিপরীতে শর্ত পরিবর্তন করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন গ্রহণের পরামর্শ দেন রেলপথমন্ত্রী। পরে বৈঠকে উপস্থিত আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে রেলওয়েকে লিখিত প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ করেন। রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনার আশ্বাসও দেন তারা।
এদিকে রেলের বিভিন্ন শূন্যপদেও নতুন করে নিয়োগের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়। এক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশনা দেন রেলপথমন্ত্রী। বৈঠকে জানানো হয়, নতুন পদে এখন থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল বা তৃতীয় কোনো পক্ষের মাধ্যমে আবেদনের ব্যবস্থা করা হবে। তারা যাচাই-বাছাই করে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করবে।
লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করবে রেলওয়ে। এক্ষেত্রে রেলভবনে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি তথা স্ট্যান্ডিং কমিটি থাকবে। ওই কমিটি উত্তীর্ণ হওয়ার সংখ্যা অনুপাতে বিভাগ বা জেলা পর্যায়ে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের জন্য উপকমিটি গঠন করে দেবে। এক্ষেত্রে বৈঠকে ১১টি বিভাগের জন্য ১১টি উপকমিটি গঠনের বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে।